সুরহাট পৌরসভার মেয়র আবদুল কাদের মির্জাকে উদ্দেশ করে তার ভাগ্নে মাহবুবুর রশীদ মঞ্জু বলেছেন, তার (কাদের মির্জা) লোভের কারণে কোম্পানীগঞ্জের সুসংগঠিত আওয়ামী লীগ শেষ। তিনি এমপি হওয়ার স্বপ্ন দেখেন, নেত্রী (প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা) যদি নমিনেশন দেন কারও আপত্তি থাকার নয়। তবে নিজে নিজে এমপি হওয়ার স্বপ্ন স্বপ্নই থেকে যাবে। শনিবার রাতে ফেসবুক লাইভে এসে তিনি এ কথা বলেন।

মঞ্জু বলেন, বসুরহাট পৌরসভা প্রথম শ্রেণির হলেও এখানে নাগরিক সুবিধা নেই। সন্ত্রাসীদের আখড়ায় পরিণত হয়েছে পৌরসভা। মশার জ্বালায় মানুষ ঘুমাতে পারে না। গত বছর এবং এ বছর মশক নিধনের জন্য ৭ কোটি টাকা ব্যয় ধরা হয়েছিল। কিন্তু মশন নিধনের নামে সব লুটপাট হয়েছে। ময়লা-আবর্জনায় ঢেকে আছে পৌরসভা। উন্নয়নের নামে অর্থের অপচয়, লোপাট ছাড়া আর কিছুই নেই।

তিনি অভিযোগ করেন, কোম্পানীগঞ্জে এখন আওয়ামী লীগ নেই, আছে ভাইলীগ। ভাইলীগের কারণে এখানে আওয়ামী লীগ অস্তিত্বহীন হওয়ার পথে। তার (মেয়র কাদের মির্জা) একক সিদ্ধান্ত ও স্বেচ্ছাচারী মনোভাবে দলের করুণ অবস্থা। যার একটি গাড়ির চাকাও নেই, সেই ফখরুল ইসলাম সবুজকে চাঁদাবাজি করে পকেট ভারী করার জন্য বাস মালিক সমিতির সভাপতি করা হয়েছে।

মঞ্জু বলেন, প্রশাসন এখন তার (মেয়র কাদের মির্জা) নির্দেশে শয়তানের অবয়বে কাজ করছে। তার নির্দেশে এখানকার প্রজাতন্ত্রের কর্মচারীরা জনসেবার পরিবর্তে চাঁদাবাজিতে ব্যস্ত। উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা, প্রাথমিক শিক্ষা, ওসি, সমবায় ও এসিল্যান্ডসহ সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীর এখন তার (মেয়র কাদের মির্জা) আজ্ঞাবহ হয়ে কাজ করছেন। প্রজাতন্ত্রের কর্মচারীরা যদি সঠিকভাবে দায়িত্ব পালন না করেন, তাহলে গণরোষে পড়ে কোম্পানীগঞ্জ ছাড়তে বাধ্য হবে। জনগণকে সঙ্গে নিয়ে উপজেলা আওয়ামী লীগ দুর্নীতিগ্রস্ত ওইসব অফিস ঘেরাও কর্মসূচি দেবে। তিনি বলেন, মাধ্যমিক ও প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মেয়র কাদের মির্জাকে খুশি রাখার জন্য প্রত্যেকটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে কমিটি গঠন করছেন।

মঞ্জু বলেন, ইতোমধ্যেই অবৈধভাবে রংমালা উচ্চ বিদ্যালয়ের পরিচালনা কমিটির সভাপতির পদ থেকে বীর মুক্তিযোদ্ধা খিজির হায়াতকে বাদ দেওয়া হয়েছে। মেয়র কাদের মির্জার নির্দেশে ওই পদে আমেরিকা প্রবাসী আইয়ুব আলীকে বসানো হয়েছে। আর ওই বিদ্যালয়ে ৪ জনের নিয়োগ বৈধতা দিতে ৮ লাখ টাকা হাতিয়ে নেওয়া হয়েছে। যার সব তথ্যপ্রমাণ উপজেলা আওয়ামী লীগের কাছে আছে।

তিনি বলেন, কদমতলা এসসি উচ্চ বিদ্যালয় থেকে সাবেক ছাত্রনেতা মনিরুজ্জামান মুনিরকে বাদ দিয়ে আরেক আমেরিকা প্রবাসী নিজামকে সভাপতি করা হচ্ছে। উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) মাইজদী থেকে ঠিকাদার এনে কোম্পানীগঞ্জে বানরের পিঠা ভাগের মতো ঠিকাদারি করছেন।

লাইভে মঞ্জু কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগে ঐক্য ফিরিয়ে আনতে দলের সাধারণ সম্পাদক সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের প্রতি আহ্বান জানান। তিনি বলেন, উপজেলা আওয়ামী লীগের সঙ্গে আমাদের নেতা ওবায়দুল কাদেরকে বসতে হবে। যারা হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছে, নির্যাতিত, আহত, পঙ্গুত্ব বরণ করছেন, মিথ্যা মামলায় পালিয়ে বেড়াচ্ছেন, তাদের সঙ্গে অবশ্যই বসতে হবে। না হলে পরবর্তী জাতীয় নির্বাচনে আপনাকে চরম খেসারত দিতে হবে।

নেতাকর্মীদের ধৈর্য ধরে অপেক্ষা করার আহ্বান জানিয়ে মঞ্জু বলেন, রমজানের পর আমাদের একমাত্র ভরসাস্থল সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের যদি কোনো ব্যবস্থা না নেন, তাহলে একযোগে পদত্যাগ করে আওয়ামী রাজনীতি থেকে বিদায় নেব। তখন দেখা যাবে আগামী জাতীয় নির্বাচনে আওয়ামী লীগ, আর ভাইলীগের কী অবস্থা হয়।